কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

“কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট” বাংলাদেশের একটি অন্যতম কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৬২ সালে স্থাপিত হয়। স্থাপিত হওয়ার পর থেকে এটি বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। শিক্ষার মান তুলনামূলকভাবে ভাল হওয়াতে এবং ক্যারিয়ার গঠনে উক্ত শিক্ষার অত্যাধিক চাহিদা থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা দিন দিন কারিগরি শিক্ষার দিকে ঝুকছে।

“কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট” কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ঐতিহ্যবাহী এবং বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান শালবন-বিহারের পাশে কুমিল্লার শিক্ষাঞ্চল নামে খ্যাত কোটবাড়ীর বুক ঘেঁষে ২৬ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। মূল ক্যাম্পাসে তিন তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট পুরাতন একাডেমিক ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট কম্পিউটার ভবন, ছয়টি বড় ওয়ার্কসপ, একটি বিশাল লাইব্রেরী, ল্যাবরেটরী, ৮০০ আসন বিশিষ্ট একটি অডিটরিয়াম, একটি মসজিদ এবং মূল ভবনের সামনে রয়েছে শহীদ মিনার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুড়াল। এছাড়াও ছাত্রদের জন্য দুইটি এবং ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হল রয়েছে। আবাসিক হলগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম ও সুন্দর, যা শিক্ষার জন্য উপযোগী। আবাসিক হলের সামনে রয়েছে একটি বিশাল আকৃতির পুকুর। শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে সরকারি বাসভবন। ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে একটি বিশাল মাঠ। মাঠের পশ্চিম পাশে একটি প্যাভিলিয়ন রয়েছে, যাতে করে দর্শনার্থীরা খেলাধুলা উপভোগ করতে পারে। আম, জাম, কাঠাল, শাল, সেগুন, গজারি, দেবদারু, কদম, নীম ইত্যাদি বনজ, ঔষধি ও ফলবৃক্ষ পরিবেষ্টিত ক্যাম্পাসটি বর্ষায় সবুজায়নের দ্বারা এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি করে।

অত্র ইনস্টিটিউটে মোট ৬ (ছয়) টি টেকনোলজি রয়েছে। টেকনোলজিগুলো হলোঃ (১) সিভিল টেকনোলজি, (২) ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, (৩) মেকানিক্যাল টেকনোলজি, (৪) পাওয়ার টেকনোলজি, (৫) ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি ও (৬) কম্পিউটার টেকনোলজি। ৬ (ছয়) টি টেকনোলজিতে প্রতি  শিফটে ৫০০ জন (সিভিলঃ ১০০, ইলেকট্রিক্যালঃ ১০০, মেকানিক্যালঃ ১০০, পাওয়ারঃ ৫০, ইলেকট্রনিক্সঃ ৫০, কম্পিউটারঃ ১০০)  করে মোট ১০০০ জন শিক্ষার্থী  ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে ১ম বর্ষ থেকে ৪র্থ বর্ষ পর্যন্ত প্রায় ৩৫০০ ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। প্রতিটি টেকনোলজির জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা একাধিক আধুনিক ল্যাব ও সপ।

এই ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি কো-কারিকুলার কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কাউটিং, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করে সফলতা অর্জন করেছে।এই প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণ শেষে “ডুয়েট” সহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে আসছে।

১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই ইনস্টিটিউট থেকে পাশ করা প্রচুর সংখ্যক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার দেশ-বিদেশে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করে কারিগরি শিক্ষার প্রসারসহ উৎপাদন ও প্রযুক্তির মানোন্নয়নে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। নির্মাণ শিল্পের বিভিন্ন উপকরণ অত্র প্রতিষ্ঠানের টেস্টিং ল্যাবসমূহে পরীক্ষা করে সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি এতদঞ্চলের শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নে অবদান রাখছে।